কাজী নজরুল ইসলাম

বাংলাদেশের জাতীয় কবি

কাজী নজরুল ইসলামের জীবনী

কাজী নজরুল ইসলাম ১৮৯৯ সালের ২৪ শে মে (১৩০৬ বঙ্গাব্দে ১২ই জ্যৈষ্ঠ) বর্ধমান জেলার আসানসোল মহাকুমার অন্তর্গত রানীগঞ্জের চুরুলিয়া গ্রামের জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবার নাম ছিল কাজী ফকির আহমেদ এবং  মায়ের নাম ছিল জাহেদা খাতুন। তার দাদা ছিলেন কাজী আমিনুল্লাহ এবং তার চাচা ছিলেন বজলে করিম। তার ডাক নাম ছিল দুখু মিয়া।  নজরুলের মা জাহেদা খাতুন ছিলেন তার বাবার দ্বিতীয় স্ত্রী। নজরুলরা ছিলেন ছয় ভাই-বোন ( চার ভাই দুই বোন )। ছয় ভাই বোনের মধ্যে নজরুল ছিলেন সবার ছোট।

কাজী নজরুল ইসলাম
কাজী নজরুল ইসলাম 

কাজী নজরুল ইসলাম 

Biography of Kazi Nazrul Islam 

জন্ম : কাজী নজরুল ইসলাম ১৮৯৯ সালের ২৪ শে মে (১৩০৬ বঙ্গাব্দে ১২ই জ্যৈষ্ঠ) বর্ধমান জেলার আসানসোল মহাকুমার অন্তর্গত রানীগঞ্জের চুরুলিয়া গ্রামের জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবার নাম ছিল কাজী ফকির আহমেদ এবং  মায়ের নাম ছিল জাহেদা খাতুন। তার দাদা ছিলেন কাজী আমিনুল্লাহ।  কাজী নজরুলের বাবা ছিলেন একটি মসজিদে ইমাম এবং সেই সাথে তিনি ছিলেন একটি মাজারে খাদেম। নজরুলের মা জাহেদা খাতুন ছিলেন তার বাবার দ্বিতীয় স্ত্রী। নজরুলরা ছিলেন ছয় ভাই-বোন ( চার ভাই দুই বোন )। ছয় ভাই বোনের মধ্যে নজরুল ছিলেন সবার ছোট। 
শৈশব : কাজী নজরুলের শৈশব অতিবাহিত হয় খুব দুঃখ কষ্টের মাধ্যমে। ১৯০৮ সালে তার বাবা কাজী ফকির আহমেদ  মৃত্যু বরণ করেন। তার বাবার মৃত্যুর পর তার জীবনে শোকের ছায়া নেমে আসে। কারণ তার বাবা ছিলেন তাদের সংসারের একমাত্র কর্মক্ষম ব্যক্তি। এজন্যই তাকে শৈশবে দুখু মিয়া বলে ডাকা হতো। বাবার মৃত্যুর পর তার বাবা যে মসজিদে ইমাম ছিলেন সেই মসজিদে মাত্র নয় বছর বয়সে তিনি মুয়াজ্জিমের চাকুরি নেন। এছাড়াও তার বাবা যে হাজী পালোয়ানের মাজারের খাদেম ছিলেন সেই মাজারের খাদেম হিসেবে নিযুক্ত হন। এর ফলে তার পড়ালেখা সাময়িকভাবে বন্ধ হয়ে যায়। এভাবেই তিনি দুই বছর জীবন অতিবাহিত করেন। এরপর ১৯১০ সালে তার চাচা কাজী বজলে করিমের সাথে লেটো গানের দলে  যোগ দেন। এখানে তার সাথে সাক্ষাৎ হয় বাসুদেব কবিয়াল ও শেখ চকোরগোদারের সাথে। এই বয়সেই শেখ চকোরগোদারের উৎসাহে, নজরুল বিভিন্ন গান  কবিতা ও  কাব্য লেখা শুরু করেছিলেন। এবং কিছু গানও সুর করেছিলেন। তার গান কবিতা ও কাব্য দেখে শেখ চকোরগোদার নজরুলকে ব্যাঙ্গাচি কবি বলে ডাকতেন। এখানে থাকাকালীন নজরুল বাংলা সাহিত্য সংস্কৃত ও হিন্দুদের পুরানসমূহ  অধ্যায়ন শুরু করেন। যে কারণে তার মধ্যে একটি ধর্মনিরপেক্ষ  মানসিকতার সৃষ্টি হয়। পাশাপাশি তিনি ১৯১০ সালে একটি মক্তবে শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন। এই মক্তবে শিক্ষকতা করতে গিয়ে ইসলাম সম্বন্ধে যে জ্ঞান তৈরি হয় তা বাংলা সাহিত্যের সাথে মিশ্রন ঘটান। 
আবার কাজী নজরুল ইসলাম ১৯১০ সালের মধ্যবর্তী সময়ে সিয়াশোল বিদ্যালয়ে চতুর্থ শ্রেণিতে  ভর্তি হন। এবং ১৯১১ সালে তিনি এই বিদ্যালয় ত্যাগ করে ভর্তি হন মথরুন ইংরেজি উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয়ে। এখানে তিনি পঞ্চম ও ষষ্ঠ শ্রেণী এই দুই বছর অধ্যায়ন করেন। ষষ্ঠ শ্রেণীতে অধ্যায়নকালীন সময়ে ১৯১২ সালে তিনি অর্থভাবে পড়েন। যার কারণে আবার তাকে পড়াশোনা বন্ধ করতে হয়। অতঃপর তিনি একজন খ্রিস্টান রেলওয়ে গার্ডের খানসামা হিসাবে চাকুরী নেন।। তবে তিনি এখানে বেশিদিন থাকেননি। ১৯১৩ সালে তিনি ওখান থেকে চলে আসেন এবং আসানসোল রেলওয়ে স্টেশনে একটি চায়ের দোকানে কাজ নেন। এই চায়ের দোকানে থাকাকালীন তিনি বিভিন্ন কবিতা ও গান লিখতেন। আসানসোল মহাকুমার দারোগা রফিজুল্লাহ তার প্রতিভায় মুগ্ধ হয়ে  ১৯১৪ সালে তিনার যখন ময়মনসিংহে পোস্টিং হয় তখন তিনি নজরুলকে সঙ্গে করে নিয়ে আসেন। এই ময়মনসিংহের ত্রিশালে দরিরামপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে সপ্তম শ্রেণীতে তাকে ভর্তি করা হয়। সপ্তম শ্রেণীতে অধ্যায়ন করার পর অষ্টম শ্রেণীতে তিনি প্রথম স্থান অধিকার করে উত্তীর্ণ হন। কিন্তু ১৯১৫ সালে আবার তিনি রানীগঞ্জের সিয়াশোল বিদ্যালয়ে ভর্তি হন। এই বিদ্যালয় থেকে তিনি অষ্টম, নবম ও দশম এই তিনটি শ্রেণী অধ্যায়ন করেন। এখানে নজরুল নবম শ্রেণীতে অধ্যায়নরত অবস্থায় ১৯১৬ সালে ১৭ বছর বয়সে রানীগঞ্জের একটি সত্য ঘটনাকে কেন্দ্র করে ক্ষমা  কাব্যটি রচনা করেন। এই ক্ষমা নামক কাব্যটি পরবর্তীতে মুক্তি নামক একটি কবিতা আকারে প্রকাশিত হয় যেটা নজরুলের প্রকাশিত সর্বপ্রথম কবিতা।  
যৌবন : যৌবনে কাজী নজরুল ছিলেন একজন সাহসী দৃঢ় সংকল্পের যুবক। ১৯১৭ সালের শেষের দিকে নজরুল সেনাবাহিনীতে যোগদিয়ে প্রথমে কলকাতার  ফোর্ট উইলিয়ামে এবং পরবর্তীতে সীমান্ত প্রদেশের নওশেরাম যান উচ্চতর প্রশিক্ষণের জন্য। এখান থেকে প্রশিক্ষণ শেষ করে নজরুল  ৪৯ নং বাঙালি পল্টনে যোগদান করে তিনি পাকিস্তানের করাচিতে চলে যান।  এই করাচিতে তিনি আড়াই বছর জীবন যাপন করেন। এখানে থাকাকালীন তিনি আরবি ফারসি হিন্দি ও উর্দু ভাষায় দক্ষতা অর্জন করেন এবং ফারসি সাহিত্যের অন্যতম শ্রেষ্ঠ কবি হাফিজের সাহিত্যে  উদ্বুদ্ধ হন।নজরুল মূলত ৪৯ নং বাঙালি পল্টনের যোগ দিয়েছিলেন প্রথম বিশ্বযুদ্ধে অংশগ্রহণ করার জন্য। এ জন্য তিনি করাচিতে অবস্থান করেন। ১৯২০ সালে বিশ্বযুদ্ধে অংশগ্রহণ করার জন্য তার ইরাকে যাবার কথা ছিল কিন্তু ইতিমধ্যে যুদ্ধর সমাপ্তি ঘটে সেই সাথে ৪৯ নং বাঙালি পল্টনটি ভেঙ্গে যায়। অতঃপর তিনি কলকাতা শহরে ফিরে আসেন এবং এই শহরে ৩২ নং কলেজ স্ট্রিটে বঙ্গীয় মুসলিম সাহিত্য সমিতিতে বসবাস শুরু করেন। এখান থেকে তার সাহিত্য-সাংবাদিকতার জীবনের সূচনা হয়। ১৯২০ সালে নজরুল ও মোজাফফার  আহম্মেদ দুজনে মিলে নবযুগ  নামের একটি রাজনৈতিক পত্রিকা বের করার পরিকল্পনা করেন। কিন্তু তাদের পত্রিকার ফান্ডিং এর জন্য তারা শের এ  বাংলা এ কে ফজলুর হকের সাথে যোগাযোগ করেন। এবং তার সহযোগিতায় তারা পত্রিকার সম্পাদনা শুরু করেন। কিন্তু একই বছরে এই পত্রিকাটি নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়। তবে এই সময়ের একটি বিখ্যাত পত্রিকা যার নাম ছিল মুসলিম ভারত এই পত্রিকায় নজরুলের খেয়া পাড়ের তরণী রচনাটি প্রকাশিত হয়। রচনাটি প্রকাশিত হবার পর বিখ্যাত সাহিত্যিক মোহিতলাল মজুমদার এ রচনাটির একটি সমালোচনা লেখেন যার ফলে নজরুলকে সবাই বড় মাপের সাহিত্যিক হিসেবে গ্রহণ করেন। 
কাজী নজরুল ইসলাম
কাজী নজরুল ইসলাম 
১৯২১ সালে কাজী নজরুল ইসলাম 'গ্রন্থপ্রকাশক' আলী আকবর খানের সাথে কুমিল্লা যান। এখানে গিয়ে তিনি গিরিবালা দেবী ও তার কন্যা আশালতা  সেনগুপ্তার সাথে পরিচিত হন। এই আলী আকবর খানের  একটি বোন ছিল যার নাম সৈয়দা খানম, নজরুল তাকে নার্গিস বলে ডাকতেন। এই সৈয়দা খানের (নার্গিস)  সাথে নজরুলের  প্রথম বিবাহ হয়। কিন্তু বিয়েতে একটি শর্ত দেওয়া হয় যে উনাকে ঘরজামাই থাকতে হবে। নজরুল এটাকে মনে করেছিলেন একজন সচেতন মানুষ হিসাবে তার জন্য একটা কলঙ্ক। তাই বিবাহের রাত্রে বাসর না করে তিনি ওখান থেকে পালিয়ে আসেন। পালিয়ে এসে  উনি আশ্রয় নেন আশালতা সেনগুপ্তাদের বাড়িতে। ১৯২৪ সালে উনি আশালতা সেনগুপ্তাকে বিয়ে করেন। আশালতা সেনগুপ্তকে নজরুল  ভালোবেসে নাম দিয়েছিলেন প্রমিলা এবং এই প্রমিলার সাথে নজরুল বাকি জীবন অতিবাহিত করেন। এছাড়া ১৯২১ সালে নজরুল রবীন্দ্রনাথের সাথে দেখা করার জন্য তার বাড়ি শান্তিনিকেতনে যান। এখানে নজরুল রবীন্দ্রনাথের সাথে প্রথম সাক্ষাৎ করেন। এই একই বছরে নজরুলের বিখ্যাত কবিতা বিদ্রোহী ও ভাঙ্গারগান  কাব্যটি প্রকাশিত হয় বিজলী নামক একটি পত্রিকায়। ১৯২২ সালে নজরুল ধূমকেতু নামের একটি পত্রিকা প্রকাশ করে। এই ধূমকেতু পত্রিকার আশীর্বাদ স্বরূপ রবীন্দ্রনাথ নজরুলকে ধূমকেতু নামে সম্বোধন করে আশীর্বাদ করেন। কিন্তু এই পত্রিকায়  আনন্দময়ীর আগমনে কবিতাটি প্রকাশ করার জন্য এটিকে ১৯২২ সালে ৮ই নভেম্বর বন্ধ করতে হয়। ১৯২২ সালের ২৩ শে নভেম্বর নজরুলের যুগবাণী  গ্রন্থটি বাজেয়াপ্ত করা হয় এবং একই  সালে তাকে গ্রেফতার করা হয়।  গ্রেপ্তারের পর ১৯২৩ সালে তাকে আদালতে হাজির করা হয়। এখানে উনি আত্মপক্ষ সমর্থনের জন্য একটি জবানবন্দি দেন যেই জবানবন্দী বাংলা সাহিত্যে রাজবন্দীর জবানবন্দী নামে প্রকাশিত হয়। এখান থেকে তাকে এক বছর কারাদণ্ড দেওয়া হয় এই কারাগারে বসে তিনি কারাগারের লৌহ কপাট গানটি রচনা করেন। ১৯২৩ সালের শেষের দিকে নভেম্বর মাসে তিনি কারাগার থেকে মুক্তি পান। মুক্তি পাবার পর অসুস্থ অবস্থায় তিনি বিয়ে করেন আশালতা সেনগুপ্তাকে।  ১৯২৮ সালে কাজী নজরুল ইসলাম নতুনের গান সংগীতটি রচনা করেন (বর্তমানে বাংলাদেশের রণ সংগীত) এবং এটি শিখা নামক পত্রিকায় প্রকাশিত হয়। ১৯৯৬ সালে নতুনের গান সংগীতের প্রথম ২১ লাইন বাংলাদেশের পদাতিক বাহিনীর রণ সংগীত হিসেবে গ্রহণ করা হয়। ১৯৩৪ সালে প্রথম কোন মুসলিম অভিনেতা হিসাবে ধ্রুব চলচ্চিত্রের নারদ নামের একটি চরিত্রে তিনি অভিনয় করেন।
শেষ জীবন : ১৯৪২ সালে ৪৩ বছর বয়সে নজরুল একটি দুরারোগ্য রোগে আক্রান্ত হয়। এই রোগের কারণে নজরুল তার বাকশক্তি হারিয়ে ফেলে। ১৯৪২ সালে যেহেতু দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ চলছিল তাই তাকে ইউরোপে নিয়ে যাওয়া কষ্টসাধ্য হয়ে দাঁড়ায়। তাই তাকে দেশে হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা গ্রহণ করতে হয়। এতে নজরুলের কোন উন্নতি হয়নি বরং পরম অবনতি ঘটে। যার ফলে নজরুল ও তার স্ত্রী প্রমীলা দেবী ১৯৪২ সাল থেকে ১৯৫২ সাল পর্যন্ত দীর্ঘ ১০ বছর লোক চক্ষুর আড়ালে চলে যান। ১৯৫২ সালে কলকাতার প্রধানমন্ত্রীর উদ্যোগে রাঁচির একটি হাসপাতালে তাকে ভর্তি করা হয়। একই বছর সেখান থেকে উচ্চতর চিকিৎসার জন্য তাকে প্রথমে লন্ডনে এবং পরে ভিয়েনাই পাঠানো হয়। কিন্তু কোন চিকিৎসায় নজরুলের জন্য সুফল বয়ে আনতে পারেনি। অবশেষে ১৯৫৩ সালে ইউরোপের অনেক গুলো দেশে নজরুলকে চিকিৎসা দিয়ে রোম থেকে দেশে ফিরিয়ে আনা হয়।বাকশক্তিহীন হয়ে নজরুলের সারাটি জীবন এভাবেই কাটে। ১৯৭২ সালের ২৪শে মে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ভারত সরকারের অনুমতি নিয়ে নজরুলকে স্থায়ীভাবে ঢাকায় নিয়ে আসেন। এটাই নজরুলের স্থায়ীভাবে শেষবার ঢাকায় আসা। এর আগে নজরুল ১৩ বার ঢাকায় এসেছিলেন নজরুল প্রথম ঢাকায় এসেছিলেন ১৯২৬ সালে। ১৯৭২ সালে তাকে বাংলাদেশের জাতীয় কবির স্বীকৃতি দেওয়া হয়। ১৯৭৪ সালের নজরুলকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ডি.লিট  ডিগ্রী প্রদান করে। ১৯৭৬ সালে নজরুলকে বাংলাদেশের নাগরিকত্ব দেওয়া হয়। এই বছরেই ২৯ই আগস্ট নজরুল পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করে পরকাল গমন করেন এবং নজরুলের ইচ্ছা অনুযায়ী  ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদের পাশে তাকে সমাধিত করা হয়। 
কাজী নজরুল ইসলাম
কাজী নজরুল ইসলাম 

কাজী নজরুল ইসলামের কাব্যগ্রন্থ:-

১। অগ্নিবীণা  [২৫শে অক্টোবর ১৯২২ খ্রিস্টাব্দে (কার্তিক ১৩২৯ বঙ্গাব্দ) প্রকাশিত হয়।
২। সাম্যবাদী  [২০ ডিসেম্বর ১৯২৫ খ্রিস্টাব্দে (পৌষ ১৩৩২ বঙ্গাব্দ) কাব্যগ্রন্থটি প্রকাশিত হয়।
৩। ঝিঙে ফুল [১৪ই এপ্রিল ১৯২৬ খ্রিস্টাব্দে (চৈত্র ১৩৩২ বঙ্গাব্দ) কাব্যগ্রন্থটি প্রকাশিত হয়।]
৪। সিন্ধু হিন্দোল [১৯২৮ খ্রিস্টাব্দে (১৩৩৪ বঙ্গাব্দ) কাব্যগ্রন্থটি প্রকাশিত হয়।]
৫। চক্রবাক [১২ই আগস্ট ১৯২৯ খ্রিস্টাব্দে (ভাদ্র ১৩৩৬ বঙ্গাব্দ) কাব্যগ্রন্থটি প্রকাশিত হয়।]
৬। নতুন চাঁদ [মার্চ ১৯৪৫ খ্রিস্টাব্দে (চৈত্র ১৩৫১ বঙ্গাব্দ) প্রকাশিত হয়।]
৭। মরুভাস্কর [১৯৫১ খ্রিস্টাব্দে (১৩৫৭ বঙ্গাব্দ)  কাব্যগ্রন্থটি প্রকাশিত হয়।]
৮। দোলন-চাঁপা [অক্টোবর ১৯২৩ খ্রিস্টাব্দে (আশ্বিন ১৩৩০ বঙ্গাব্দ) প্রকাশিত হয়।]
৯। বিষের বাঁশি [১০ই আগস্ট ১৯২৪ খ্রিস্টাব্দে (শ্রাবণ ১৩৩১ বঙ্গাব্দ) গ্রন্থটি প্রকাশিত হয়।]
১০। ভাঙ্গার গান [আগস্ট ১৯২৪ খ্রিস্টাব্দে (শ্রাবণ ১৩৩১ বঙ্গাব্দ) প্রকাশিত হয়।]
১১। চিত্তনামা [আগস্ট ১৯২৫ খ্রিস্টাব্দে (শ্রাবণ ১৩৩২ বঙ্গাব্দ) প্রকাশিত হয়।]
১২। ছায়ানট [২১শে সেপ্টেম্বর ১৯২৫ খ্রিস্টাব্দে (আশ্বিন ১৩৩২ বঙ্গাব্দ) প্রকাশিত হয়।]
১৩। পুবের হাওয়া [৩০শে জানুয়ারি ১৯২৬ খ্রিস্টাব্দে (মাঘ ১৩৩২ বঙ্গাব্দ) প্রকাশিত হয়।]
১৪। সর্বহারা [২৫শে অক্টোবর ১৯২৬ খ্রিস্টাব্দে (আশ্বিন ১৩৩৩ বঙ্গাব্দ) প্রকাশিত হয়।]
১৫। ফণী-মনসা [২৯শে জুলাই ১৯২৭ খ্রিস্টাব্দ (শ্রাবণ ১৩৩৪ বঙ্গাব্দ) প্রকাশিত হয়।]
১৬। সঞ্চিতা [১৪ই অক্টোবর ১৯২৮ খ্রিস্টাব্দে (আশ্বিন ১৩৩৫ বঙ্গাব্দ) প্রকাশিত হয়।]
১৭। জিঞ্জীর [১৫ই নভেম্বর ১৯২৮ খ্রিস্টাব্দে (কার্তিক ১৩৩৫ বঙ্গাব্দ) প্রকাশিত হয়।]
১৮। সন্ধ্যা [১২ই আগস্ট ১৯২৯ খ্রিস্টাব্দে (ভাদ্র ১৩৩৬ বঙ্গাব্দ) প্রকাশিত হয়।]
১৯। প্রলয় শিখা [আগস্ট ১৯৩০ খ্রিস্টাব্দে (অগ্রহায়ণ ১৩৩৭ বঙ্গাব্দ) প্রকাশিত হয়।]
২০। নির্ঝর [২৩শে জানুয়ারি ১৯৩৯ খ্রিস্টাব্দে (মাঘ ১৩৪৫ বঙ্গাব্দ) প্রকাশিত হয়।]
২১। সঞ্চয়ন [১৯৫৫ খ্রিস্টাব্দে (১৩৬২ বঙ্গাব্দ) প্রকাশিত হয়।]
২২। ঝড় [জানুয়ারি ১৯৬১ খ্রিস্টাব্দে (মাঘ ১৩৬৭ বঙ্গাব্দ) প্রকাশিত হয়।]

কাজী নজরুল ইসলামের উল্লেখযোগ্য উপন্যাসগুলো হল:-

১। অশ্রু - ১৯২১ সালে।
২। দ্বন্দ্ব - ১৯২৩ সালে।
৩। বসন্ত - ১৯২৫ সালে।
৪। রাত্রি - ১৯৩১ সালে।

অশ্রু: এটি নজরুলের প্রথম উপন্যাস, যা ১৯২১ সালে প্রকাশিত হয়। এখানে প্রেম এবং বিদ্রোহের উপাখ্যান তুলে ধরা হয়েছে।
দ্বন্দ্ব: এই উপন্যাসে সামাজিক দ্বন্দ্ব এবং মানবিক সম্পর্কের জটিলতা নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে।
বসন্ত: এটি একটি প্রেমের কাহিনী, যেখানে বসন্তের ঋতু এবং জীবনের বিভিন্ন দিকের সমন্বয় ঘটেছে।
রাত্রি: এই উপন্যাসে রাত্রির গহিন রহস্য এবং মানুষের অন্তর্দ্বন্দ্ব নিয়ে আলোকপাত করা হয়েছে।

কাজী নজরুলের উপন্যাসগুলোতে প্রগতিশীল ভাবনা, প্রেম, বিদ্রোহ এবং সমাজের নানা অসঙ্গতি নিয়ে গভীরভাবে বিশ্লেষণ করা হয়েছে।

কাজী নজরুল ইসলামের কিছু বিখ্যাত কবিতা ও তাদের প্রকাশকাল:-

১। বিদ্রোহী - ১৯২১
২। অগ্নিবীণা - ১৯১৯
৩। প্রলয়োল্লাস - ১৯২২
৪। ধূমকেতু - ১৯৩৫
৫। মায়ের ডাক - ১৯৪৩
৬। কনকচাঁপা - ১৯৩৫
৭। শেষরাতের গান - ১৯৪৫
৮। বিষাদ সিন্ধু - ১৯২৭
৯। জাগরণ - ১৯৩৪
১০। সতীশ - ১৯৩২

এই কবিতাগুলোতে নজরুলের বিদ্রোহ, প্রেম, মানবতা ও সমাজের নানা দিক প্রতিফলিত হয়েছে।

কাজী নজরুল ইসলামের কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রবন্ধ এবং তাদের প্রকাশের সাল:-

১। দেশপ্রেম - ১৯২২
২। সম্যক বিচার - ১৯৩২
৩। নারী - ১৯৩০
৪। শিক্ষা - ১৯৩৩
৫। বাঙালির জাতীয়তা - ১৯৩৯
৬। সাহিত্য ও সমাজ - ১৯৪৪
৭। বাংলাদেশের সাম্প্রদায়িকতা - ১৯৪৪
৮। একটি কল্পনা - ১৯৩১

নজরুলের প্রবন্ধগুলোতে সমাজ, সংস্কৃতি, নারী ও জাতীয়তার উপর তার চিন্তাভাবনা ও বিশ্লেষণ স্পষ্টভাবে উঠে এসেছে।

কাজী নজরুল ইসলামের কিছু বিখ্যাত গান:-

১। কার বাণী শুনি - ১৯২৫
২। তুমি কি দেখেছ কভূ - ১৯৩৫
৩। মোরা দরিদ্র, মোরা দুর্বল - ১৯৩১
৪। বিজয়ের দিন এসেছে - ১৯৪৪
৫। গাহি শ্রীসাধন গান - ১৯৩২
৬। মার্চিং টু ওয়ার - ১৯৪৫
৭। তুমি কে, কোথায়, কেমন - ১৯৩৫
৮। জাগো জাগো জাগো - ১৯৩৪
৯। নীল দরিয়া - ১৯৩৫
১০।আসছে গো খোকা - ১৯৪৫

কাজী নজরুলের গানগুলোতে তার দেশপ্রেম, সংগ্রাম, বিদ্রোহ ও মানবতার নানা দিক প্রতিফলিত হয়েছে।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নবীনতর পূর্বতন